চর্মরোগে নিম পাতার ব্যবহার সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন
  চর্মরোগে নিম পাতার ব্যবহার সম্পর্কে আপনার যদি না জানা থাকে। তাহলে আজকের এই
  আর্টিকেল থেকে জেনে নিন। অনেকের মানুষের চর্মরোগ হয়ে থাকে। কিন্তু কীভাবে নিম
  পাতা দিয়ে চর্মরোগ ঠিক করবে সেটা সম্পর্কে হইত তেমন কোনো ধারণা নেই। সেজন্য আজকে
  আমি এই আর্টিকেলে সঠিকভাবে ধারণা দেয়ার চেষ্টা করবো। তাই আর্টিকেলটি মনোযোগ
  সহকারে পড়ুন।
  আপনি যদি শেষ পর্যন্ত আমাদের আর্টিকেলটি পড়ে থাকেন। তাহলে নিম পাতা কোথায়
  পাওয়া যায়, নিম পাতার বৈশিষ্ট্য, ব্রণের জন্য নিম পাতার ব্যবহার, চর্মরোগে নিম
  পাতার ব্যবহার, নিম পাতা সিদ্ধ পানি, তৈলাক্ত ত্বকে নিম পাতার ব্যবহার, এই সকল
  বিষয়ে সঠিক ধারণা পেয়ে যাবেন।
ভূমিকা
  অনেক সময় দেখা যায় চর্মরোগের কারণে বিভিন্ন ওষুধ সেবন করে থাকেন। তবে এই
  চর্মরোগ এমন একটি সমস্যা যা দ্রুত চিকিৎসা না করলে আরো বেড়ে যেতে পারে। তাই আপনি
  যদি বাড়ির কাছে নিম পাতা ব্যবহার করে থাকেন, তাহলে চর্মরোগ দূর হয়ে যাবে। তাই
  আজকের আর্টিকেলে চর্মরোগে নিম পাতার ব্যবহার এবং ব্রণের জন্য নিম পাতার ব্যবহার
  এই বিষয়গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। যদি আপনি আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে
  পড়তে পারেন, তাহলে আশা করি অনেক উপকৃত হবেন। তাই এর দেরি না সেই সমস্ত বিষয়গুলো
  খুব ভালোভাবে জেনে নিন।  
তৈলাক্ত ত্বকে নিম পাতার ব্যবহার
  নিম পাতা ত্বকের জন্য খুবই অসাধারণ একটি উপাদান। বিশেষ করে তৈলাক্ত ত্বকের জন্য
  এই নিম পাতা অত্যন্ত কার্যকারী। এতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট,
  অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্ট-ইনফ্ল্যামেটরি বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা ত্বকের
  জন্য খুবই উপকারী। এই নিম পাতা অতিরিক্ত তেল শোষণ করতে সাহায্য করে। এছাড়াও নিম
  পাতা মুখের ছিদ্র বন্ধ করতে বেশ ভালো সাহায্য করে। এই নিম পাতা মুখের দাগ ও ব্রণ
  দূর করে এবং ত্বককে অনেক উজ্জ্বল ও মসৃণ করে তোলে। তৈলাক্ত ত্বকে নিম পাতার
  ব্যবহার অত্যন্ত ভালো। 
  এই নিম পাতা ত্বকের ইনফেকশন দূর করে এবং ত্বকে অনেক কোমল ও মসৃণ করে তোলে।
  বিভিন্ন সময়ে দেখা যায় ত্বক অযত্নের কারণে শুষ্ক হয়ে যায়। তবে আপনি যদি নিম
  পাতার গুঁড়া ও কয়েক ফোটা জলপাই তেল একসঙ্গে মিশ্রণ করে মুখে ভালোভাবে লাগাতে
  পারেন, তাহলে আপনার শুষ্ক ত্বক থেকে রেহাই পাবেন। এই নিম পাতার গুঁড়া ও জলপাই
  তেল ১০ থেকে ১৫ মিনিট মুখে লাগিয়ে রাখুন এরপর পরিষ্কার ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে
  ফেলুন।  
  এই ফেসপ্যাকটি সপ্তাহে ২ দিন ব্যবহার করলে আশা করি খুব ভালো ফলাফল পাবেন। নিম
  পাতা ত্বকের জন্য একটি নিরাপদ ও কার্যকর উপাদান। এই নিম পাতা নিয়মিত ব্যবহারে
  ফলে তৈলাক্ত ত্বকের  সমস্যা দূর হয়ে যায়। পাশাপাশি ত্বক সুন্দর ও উজ্জ্বল
  করতে সাহায্য করবে। তাহলে বুঝতেই পেরেছেন তৈলাক্ত ত্বকের নিম পাতার ব্যবহার
  কতটুকু রয়েছে।
নিম পাতা সিদ্ধ পানি
      অনেক সময় দেখা যায় জ্বর হলে নিম পাতা সেদ্ধ পানি দিয়ে গোসল করে। তবে শুধু
      যে জ্বরের কাজ করে তা নয় এই নিম পাতা শরীরের সকল রোগ-জীবাণুর হাত থেকে রক্ষা
      করে। যদি আপনি নিমপাতা ব্যবহার করে থাকেন তাহলে আপনার অনেক উপকার। কারণ এই
      নিম পাতা আপনার চুলের যত্নেও খুবই কার্যকর। যদি আপনি গরম পানিতে নিম পাতা
      ফুটিয়ে সেটা একটু ঠান্ডা করে নিয়ে স্বাভাবিক পানির সঙ্গে মিশ্রণ করে যদি
      গোসল করতে পারেন। 
    
    
      তাহলে আপনার ত্বকের সংক্রমণ অনেকটা কমে যাবে। এছাড়াও এই নিম পাতার পানি
      খুশকি কমানোর ক্ষেত্রেও বেশ ভালো কাজ করে। যদি আপনি নিমের ভেষজ চা পানীয়
      হিসেবে পান করতে পারেন। তাহলে আপনার পেটের বিভিন্ন সমস্যা দূর হয়ে যাবে। এই
      নিম পাতা আপনার মুখের দাগ ব্রণ এগুলো কমাতেও সাহায্য করে। এই নিম পাতা
      নিয়মিত খেতে পারলে আপনার হজম শক্তি উন্নতি হবে। 
    
    
    
      এছাড়াও যদি কারো কাশি হয়ে থাকে বা ক্লান্তি থাকে এগুলো দূর করতেও নিমপাতার
      ব্যবহার করা যেতে পারে। নিম পাতা সেদ্ধ পানি ব্যবহার করলে আপনার শরীরের অনেক
      উপকার। নিম পাতা সিদ্ধ পানি দিয়ে চুল ধুলে চুল অনেক মসৃণ ও উজ্জ্বল হয়ে উঠে।
      আশা করি নিম পাতা সিদ্ধ পানি সম্পর্কে আপনি একটি সঠিক ধারণা
      পেয়েছেন।  
    
    চর্মরোগে নিম পাতার ব্যবহার
        চর্মরোগ এক ধরনের মারাত্মক রোগ। এই রোগ যাদের হয়ে থাকে শুধুমাত্র তারাই এই
        রোগের যন্ত্রণা বুঝে। বিশেষ করে এই চর্মরোগ বর্ষাকালে হয়ে থাকে। কারণ
        বর্ষাকালে আর্দ্রতার সমস্যার কারণে এই চর্মরোগ ছড়িয়ে পড়ে। তবে এই সমস্যা
        দূর করার জন্য নিম পাতা ব্যবহার করা যেতে পারে। যদি আপনি নিমপাতা ব্যবহার
        করেন তাহলে আপনার চর্মরোগ খুব দ্রুত দূর হয়ে যাবে। এই চর্মরোগে নিম পাতার
        ব্যবহার খুবই কার্যকরী। 
      
      
        যদি আপনি বর্ষায় চর্মরোগ এড়াতে চান তাহলে আপনাকে পরিষ্কার শুকনো
        জামাকাপড় পরিধান করতে হবে। এর পাশাপাশি হাত-পা ভিজতে দেওয়া যাবে না। কারণ
        অতিরিক্ত হাত পা ভেজা অবস্থায় থাকলে দাদ ও চুলকানির সমস্যা আরো বেড়ে যেতে
        পারে। এই চর্মরোগের জন্য নিমপাতা খুবই উপকারী। প্রাচীনকাল থেকেই ওষুধ
        হিসেবে এই নিম পাতা ব্যবহার হয়ে আসছে। এই নিম পাতায় প্রচুর ঔষধি গুন রয়েছে
        যা বিভিন্ন সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। 
      
      
      
        চর্মরোগ দূর করতে প্রথমে নিম গাছের শুকনো ছাল তুলে গুঁড়ো করে নিতে হবে।
        এরপর ৩ গ্রাম পাউডার এবং এক গ্লাস পানি নিয়ে সেই শুকনো সালের গুঁড়ো
        সারারাত ভিজিয়ে রাখতে হবে। তারপর সকালে সেি ভিজিয়ে রাখা পানিতে সামান্য
        পরিমাণ মধু মিশিয়ে ব্যবহার করতে হবে। যদি আপনি এইভাবে ব্যবহার করতে পারেন।
        তাহলে আপনার চর্মরোগ অনেক উপশম পাওয়া যাবে। তাহলে বুঝতেই পারছেন চর্মরোগে
        নিম পাতার ব্যবহার কতটুকু রয়েছে। 
      
    ব্রণের জন্য নিম পাতার ব্যবহার
        অনেকেই মুখের ব্রণ নিয়ে খুব চিন্তার মধ্যে থাকেন। অনেক ছেলে-মেয়ে এই
        সমস্যা সমাধান করতে পারেন না। বিভিন্ন ওষুধ সেবন করার পরেও এই মুখের ব্রণ ও
        দাগ দূর হয় না। তাই আজকের আর্টিকেলে ব্রণের জন্য নিম পাতার ব্যবহার
        সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। যদি আপনি ব্রণ ও দাগ দূর করতে চান তাহলে
        অবশ্যই নিম পাতা ব্যবহার করতে পারেন। কারণ নিম পাতায় এমন ঔষধি গুনাগুন
        রয়েছে যা আপনার ব্রণ সারিয়ে তুলতে সাহায্য করবে। চলুন তাহলে আর দেরি না
        করে ব্রণের জন্য নিম পাতার ব্যবহার জেনে নিন।  
      
      
        ব্রণ এমন একটি সমস্যা যা প্রায় কম-বেশি সকল মানুষের মুখে হয়ে থাকে। তবে
        এই ব্রণ দূর করতে আপনাকে প্রথমে ১ চামচ নিমপাতার গুড়া ও ১ চা চামচ গোলাপজল
        এবং হাফ চামচ লেবুর রস একত্রে মিশ্রণ করে নিবেন। এরপরে পেস্ট তৈরি করা হয়ে
        গেলে ত্বকে লাগিয়ে রাখুন ২০ মিনিট পর্যন্ত। ত্বকে লাগিয়ে রাখার পর শুকিয়ে
        গেলে পরিষ্কার ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। এইভাবে সপ্তাহে দুইদিন
        ব্যবহার করলে ব্রণ দূর হয়ে যাবে।  
      
      
      
        এছাড়াও এই ব্রণ দূর করার আরো কিছু নিয়ম রয়েছে প্রথমে নিমের পাতা নিন।
        এরপর সামান্য পরিমাণ হলুদের গুঁড়ো নিন এবং ঠান্ডা দুধ দিয়ে পেস্ট তৈরি
        করে নিন। এরপর এই পেস্টটুকু ত্বকে লাগিয়ে রাখুন এরপর হাত দিয়ে আলতো করে
        ম্যাসাজ করুন। এরপর ১৫ থেকে ২০ মিনিট পর শুকিয়ে গেলে পরিষ্কার ঠান্ডা পানি
        দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এভাবে সপ্তাহে দুইদিন ব্যবহার করুন। তাহলে আপনার ব্রণের
        সমস্যা সহ ত্বকের তৈলাক্ত ভাব  দূর হয়ে যাবে। 
      
      
        এছাড়াও যারা ত্বকের দাগ নিয়ে চিন্তার মধ্যে রয়েছেন তারা নিম পাতা
        সিদ্ধ করে পেস্ট তৈরি করে মুখে ১০ থেকে ১৫ মিনিট লাগিয়ে রাখুন। এরপর
        পরিষ্কার ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে নিন। যদি আপনি নিয়মিত এভাবে ব্যবহার
        করতে পারেন তাহলে আশা করি আপনার মুখের দাগ দূর হয়ে যাবে। তাহলে বুঝতে
        পেরেছেন ব্রণের জন্য নিম পাতার ব্যবহার কতটুকু প্রয়োজন।
      
    নিম পাতার বৈশিষ্ট্য
        নিম পাতার বৈশিষ্ট্য অনেক রয়েছে। এই নিমপাতা প্রাচীনকাল থেকেই ঔষধি হিসেবে
        ব্যবহার হয়ে আসছে। বিভিন্ন সমস্যা দূর করতে এই নিমপাতা খুবই উপকারী। এই
        নিম পাতায় যে ঔষধি গুনাগুন রয়েছে যা শরীরের বিভিন্ন রোগ-জীবাণু দূর করতে
        সাহায্য করে। এছাড়াও এই নিম পাতা গরম করে তার সঙ্গে স্বাভাবিক পানি দিয়ে
        গোসল করলে শরীরের অনেক উপকার হয়ে থাকে। পাশাপাশি চুলের খুশকি দূর
        হয়। 
      
      
        এছাড়াও এই নিম গাছের পাতা, শিকড়, বাকল, ও নিম ফল এই সব কিছুই কাঁচামাল
        হিসেবে পরিচিত নিম গাছের সবকিছুই ঔষধ হিসেবে ব্যবহার করা হয়। বর্তমান
        বিশ্বে নিম পাতার ব্যবহার করে আসছে অনেক মানুষ। এই নিম পাতা ব্যাকটেরিয়া
        দূর করতে সাহায্য করে। এছাড়াও এই নিম পাতা জ্বর, কাশি, ম্যালেরিয়া,
        ভাইরাসজনিত রোগ ও ব্যাথাসহ সকল সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। এই নিম পাতার
        বৈশিষ্ট্য অনেক বেশি যা বলে শেষ করা যাবে না। 
      
      
      
        এই নিম পাতা ব্যবহার করে মানুষ বিভিন্ন সমস্যা থেকে খুব দ্রুত মুক্তি পেয়ে
        থাকেন। যাদের ত্বক অনেক শুষ্ক তারা এই নিম পাতা ব্যবহার করার ফলে সেই
        শুষ্কতা দূর হয়ে যায়। এছাড়াও এই নিম পাতা আদিমকাল থেকে চুলের যত্নে
        ব্যবহার হয়ে আসছে। নিম পাতা তিক্ত স্বাদের এবং সুগন্ধযুক্ত। নিমের পাতা
        থেকে তৈরি তেল ত্বকের যত্নে এবং চুলের যত্নের জন্য ব্যবহৃত হয়। তাহলে
        বুঝতেই পারছেন নিম পাতার বৈশিষ্ট্য কতটুকু রয়েছে।
      
      নিম পাতা কোথায় পাওয়া যায়
        বিশেষ করে গ্রাম অঞ্চলে নিম গাছের অভাব নেই। যাদের নিমপাতা অত্যন্ত
        প্রয়োজন তারা গ্রাম অঞ্চলে যেয়ে খোঁজ করলে নিম গাছের পাতা পেয়ে যাবেন। এই
        নিম গাছের পাতা প্রাচীনকাল থেকে ওষুধ হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসছে। এই নিম
        গাছের ঔষধি গুনাগুন অপরিসীম। এই নিমপাতা কোথায় পাওয়া যায় সেটা অনেকেই
        জানেন। আপনি যদি গ্ৰাম অঞ্চলে একটু ঘোরাঘুরি করেন তাহলে অনেক নিম গাছ দেখতে
        পাবেন। যদি গাছে ওঠার অভ্যাস না থাকে তাহলে অন্য কাউকে দিয়ে নিমপাতা
        নামিয়ে নিতে পারেন। তাহলে নিশ্চয়ই আপনি এখন নিম পাতা কোথায় পাওয়া যায়
        সেটা জানতে পেরেছেন।
      
      
    শেষ কথা | চর্মরোগে নিম পাতার ব্যবহার
প্রিয় পাঠক সম্পূর্ণ আর্টিকেল পড়ে আশা করি চর্মরোগে নিম পাতার ব্যবহার এবং ব্রণের জন্য নিম পাতার ব্যবহার সম্পর্কে একটি সুস্পষ্ট ধারণা দিতে সক্ষম হয়েছি। আর্টিকেলটি পড়ে যদি আপনি উপকৃত হয়ে থাকেন। তাহলে অবশ্যই বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না। এই আর্টিকেলটি বন্ধুদের সাথে শেয়ার করলে আপনার বন্ধুরাও জানতে পারবে। তাই দেরি না করে আপনার বন্ধুদের সাথে আর্টিকেলটি শেয়ার করুন।এই রকম আরো আর্টিকেল পেতে আমাদের ওয়েবসাইট নিয়মিত ভিজিট করুন। এই আর্টিকেলটি পড়ে যদি আপনার কোনো মতামত জানানোর থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করে সেটা জানিয়ে যাবেন। (ধন্যবাদ) আসসালামু আলাইকুম।

এখানে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url