ভাতের মাড়ের ক্ষতিকর দিক - ভাতের মাড় চুলে দিলে কি হয়
  ভাতের মাড়ের ক্ষতিকর দিক কি? এই প্রশ্ন অনেকের মনেই জাগে। আমরা অনেকেই ভাতের
  মাড়কে ফেলে দিই। কিন্তু এই মাড়ে অনেক পুষ্টিগুণ থাকলেও এর কিছু ক্ষতিকর দিকও
  আছে। আজকের আর্টিকেলে আমরা ভাতের মাড়ের উপকারিতা এবং ক্ষতি সম্পর্কে বিস্তারিত
  জানব। 
এই আর্টিকেলের একদম শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়লে ভাতের মাড় খেলে কি মোটা হয়,
  ভাতের মাড় খাওয়ার নিয়ম, ভাতের মাড়ের উপকারিতা ও অপকারিতা, ভাতের মাড় চুলে
  দিলে কি হয়, ভাতের ফ্যান খেলে কি হয় এই বিষয়গুলো সম্পর্কে সঠিকভাবে জেনে যাবেন।
ভূমিকা
  ভাতের মাড় প্রায়শই অনেকের কাছে পুষ্টিকর বলে বিবেচিত হয়, তবে অতিরিক্ত মাড়
  গ্রহণে কিছু ক্ষতিকর দিক রয়েছে। বিশেষ করে, ভাতের মাড়ে উচ্চ পরিমাণে
  কার্বোহাইড্রেট এবং স্টার্চ থাকে, যা অতিরিক্ত খেলে ওজন বৃদ্ধি এবং রক্তে শর্করার
  মাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারে। এটি বিশেষ করে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ক্ষতিকর হতে
  পারে। শুধু তাই নয় এই আর্টিকেল শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়লে আপনারা ভাতের মাড়ের
  সমস্ত বিষয়গুলো বিস্তারিত জেনে যাবেন। তাহলে চলুন আর দেরি না করে ভাতের মাড়ের
  ক্ষতিকর দিক এবং ভাতের মাড়ের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া
  যাক।
ভাতের মাড় খেলে কি মোটা হয়
  ভাতের মাড় খেলে কি মোটা হয় এই বিষয়টি সম্পর্কে আপনাদের অনেকেরই অজানা। চিন্তার
  কোন কারণ নেই এই আর্টিকেলে এই বিষয়টি সম্পর্কে সঠিকভাবে আলোচনা করার চেষ্টা করব।
  অনেকেই রয়েছেন যারা ওজন নিয়ে খুব চিন্তার মধ্যে পড়ে যায়। 
  আবার এর মধ্যে অনেকে রয়েছে অতিরিক্ত চিকন হওয়া নিয়েও চিন্তার মধ্যে থাকে।
  কিন্তু ভাতের মার খেলে কি আসলেই মোটা হওয়া সম্ভব? কথাটা কতটা সত্য তা চলুন এই
  আর্টিকেল থেকে জেনে নেওয়া যাক।
  যদি আপনার ওজন কমে যায় কিংবা ওজন বৃদ্ধি হয় তাহলে প্রথমে চিকিৎসকের পরামর্শ
  গ্রহণ করুন। কারন মানুষের শারীরিক সমস্যার কারণেও ওজন কমে যেতে পারে। বিশেষ করে
  অনেক মানুষের বিভিন্ন রোগ হয় আর এর কারণেই ওজন কমে যায় যেমন থাইরয়েডের সমস্যা
  হজম শক্তি কমে যাওয়া ইত্যাদি। 
  প্রতিটা মানুষের জন্য আলাদা আলাদা সমস্যা থাকতে পারে। তাই প্রথমত আপনাকে BMI চেক
  করে দেখতে হবে। যদি আপনার BMI ১৮.৫ থেকে ২৪.৫ মধ্যে থাকে বা কারো যদি BMI ১৭ বা
  ১৮ এর নিচে থাকে তাহলে তার তুলনা মূলকভাবে স্বাভাবিকের চেয়ে ওজন অনেকটা কম থাকবে
  বা রয়েছে। 
  আর যদি আপনি আইডি চেক করার পর ওজন কম দেখেন তাহলে পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করবেন
  যেমন প্রোটিন, সবুজ শাক-সবজি, ফ্যাট যুক্ত খাবার, শর্করা ইত্যাদি। এগুলো খাওয়ার
  ফলে আশা করি আপনার ওজন বৃদ্ধি হবে। তবে কিছু কিছু মানুষের ভাতের মাড় খাওয়ার ফলে
  ওজন বৃদ্ধি হতে পারে। 
  কারণ ভাতের মাড়ে রয়েছে শর্করা যা ওজন বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। তবে সকল মানুষের
  ক্ষেত্রে এক নয়। আশা করি আপনি বুঝতে পেরেছেন যে ভাতের মার খেলে কি মোটা হয় কি
  না।
ভাতের মাড় খাওয়ার নিয়ম
  আপনাদের মধ্যে এমন অনেকেই রয়েছে যারা ভাতের মাড় খেতে পছন্দ করেন। কিন্তু এর
  মধ্যে অনেকেই জানেন না ভাতের মাড় খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে। তাই আপনাদের
  সুবিধার্থে কিভাবে সঠিক নিয়মে ভাতের মাড় খাওয়া যায় তা নিয়ে এই আর্টিকেলে
  বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। তাই আসুন এই বিষয়টি সম্পর্কে সঠিকভাবে জেনে নিন।
- প্রথমত আপনাকে যেটা করতে হবে ভাত রান্না করা হয়ে গেলে ভাতের মাড় পরিষ্কার একটি বাটিতে ঢেলে ঠান্ডা করে নিবেন। এরপর একটি লেবুর রস কিংবা দারুচিনির টুকরো দিয়ে একসঙ্গে মিশ্রণ করে খেতে পারবেন। যদি আপনারা খাবারের আগে ১ গ্লাস ভাতের মাড় খেতে পারেন, তাহলে খুদা কম লাগবে এবং ক্যালোরিও কম খাওয়া হবে।
- শুধু তাই নয়, আমাদের মধ্যে এমন অনেক রয়েছে যারা কোমল পানীয় খাই। তবে এগুলোতে উচ্চ ক্যালোরি এবং প্রচুর চিনি থাকে যা স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। তাই এগুলো বাদ দিয়ে আপনারা ভাতের মাড় খেতে পারেন। এই ভাতের মাড়ে হালকা একটু গন্ধ থাকার কারণে এটি স্মুদি বা ভেষজ চায়ে ব্যবহার করেও খাওয়া যেতে পারে।
- তাছাড়া আপনারা চাইলে রান্নার সময় তরল হিসেবে ভাতের মাড় নিয়ে স্টক হিসেবে খেতে পারেন। এটি খাবারের পুষ্টি জোগাতে সাহায্য করে এবং সুক্ষ গন্ধ দিয়ে থাকে। এছাড়াও আপনারা চাইলে ভাতের মাড় স্যুপ হিসেবেও খেতে পারেন। সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া
ভাতের মাড়ের উপকারিতা ও অপকারিতা
  ভাত বাঙালি জাতির অত্যন্ত প্রিয় একটি খাবার। এই ভাতের সঙ্গে আমরা বাঙালি জাতি
  খুব নিবিড়ভাবে জড়িয়ে রয়েছি। ভাত ছাড়া আমাদের দিন যেন শুরুই হয় না।
  শুধুমাত্র বাংলাদেশে এই ভাত অত্যন্ত প্রিয় তা নয় অন্যান্য দেশগুলোতেও এই ভাতের
  চাহিদা অনেক বেশি। বাঙালি জাতি কথাই বলে আমরা মাছে ভাতে বাঙালি। কথাটা আসলেই
  সত্য। 
ভাত আমাদের শারীরিক শক্তি জোগাতে অনেক বেশি সাহায্য করে। কিন্তু ভাতের পাশাপাশি
  ভাতের মাড়ের উপকারিতা ও অপকারিতাও রয়েছে তারা কয়জন জানি? আপনাদের সুবিধার জন্য
  আজকে আমি এই আর্টিকেলে এ বিষয়টি সম্পর্কে থেকে সঠিকভাবে আলোচনা করার চেষ্টা করব।
  চলুন তাহলে ভাতের মাড় খেলে কি কি উপকার হয় তা জেনে নিন।
ভাতের মাড়ের উপকারিতা ও অপকারিতাঃ
  ত্বককে সুন্দর করেঃ যদি আপনি প্রতিদিন মুখে ভাতের মার লাগিয়ে মেসেজ করতে
  পারেন তাহলে আপনার ত্বকের ছিদ্র সবগুলো ছোট ছোট হয় সেইসঙ্গে স্কিনের উপরিঅংশে
  জমে থাকা মৃত কোষের আবরণ দূর হয়ে যায় ফলে স্বাভাবিকভাবে আপনার ত্বক আগের তুলনায়
  অনেক সুন্দর হয়ে ওঠে।
  রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করেঃ ভাতের মায়ের মধ্যে থাকা একাধিক
  পুষ্টিগুণ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। যাদের রোগ প্রতিরোধ
  ক্ষমতা অনেক কম তারা প্রতিনিয়ত রাতের মার খাওয়ার চেষ্টা করুন আশা করি অনেক ভালো
  ফলাফল পাবেন।
  মুখের ব্রণ কমতেঃ অধিকাংশ মানুষের মুখে প্রায় সময় দেখা যায় মুখে ব্রণ
  বের হয়। এটি কারো কারো বংশগত সমস্যার কারণে হয়ে থাকে। আবার কারো কারো বিভিন্ন
  শারীরিক সমস্যার কারণে হয়ে থাকে।তবে এই ব্রণের প্রকোপ দূর করার জন্য প্রতিদিন
  ২বার করে ভাতের মাড় ভালোভাবে মুখে লাগিয়ে রাখলে ধীরে ধীরে ব্রণ কমতে শুরু হয়।
  কারণ ভাতের মাড়ে থাকা উপস্থিত এন্টি ইনফ্লামেটরি উপাদান গুলো ত্বকের ব্রণ কমাতে
  সাহায্য করে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ত্বকের ব্রণ দূর হয়ে যায়।
  কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করেঃ তাদের কোষ্ঠকাঠিন্যের মত সমস্যা রয়েছে তারা
  প্রতিদিন নিয়ম করে ২ গ্লাস ভাতের মাড় খাওয়ার অভ্যাস তৈরি করুন। কারণ ভাতের মাড়
  খাওয়ার ফলে কোষ্ঠকাঠিন্য উপশম হয়।
  চুলের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করেঃ আপনি যদি চুলের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করতে চান
  তাহলে ভাতের মাড় ব্যবহার করতে পারেন। সে ক্ষেত্রে প্রথমে আপনাকে ভাতের মাড় ভালো
  করে চুলে লাগিয়ে নিতে হবে। এরপর কিছুক্ষণ অপেক্ষা করার পর হালকা কুসুম গরম পানি
  দিয়ে চুলটা ভালোভাবে ধুয়ে নিতে হবে। 
  এতে করে আপনার চুলের গোড়ায় পুষ্টির অভাব দূর হবে। ফলে চুল পড়া দূর হবে এবং
  বিভিন্ন স্কাল্প সম্পর্কিত রোগের প্রকোপ কমতে শুরু করবে। সেই সঙ্গে আপনার চুলের
  সৌন্দর্যতা বৃদ্ধি পাবে।
  পেট খারাপের উপশমঃ যাদের পেট খারাপের সমস্যা রয়েছে অর্থাৎ ডায়রিয়া তারা
  প্রতিদিন ভাতের মাড় এবং ১ চিমটি লবণ একসঙ্গে মিশ্রণ করে খেতে পারলে পেট খারাপের
  সমস্যা খুব সহজেই দূর হয়ে যাবে।
  এনার্জির ঘাটতি দূর করেঃ অনেক সময় বিভিন্ন কারণে এনার্জির ঘাটতে হয়।
  প্রতিদিন ১ গ্লাস ভাতের মাড় খেলে শরীরের ৮টি উপকারী এসিডের মাত্রা বৃদ্ধি পায় যা
  এক্সারসাইজের সময় পেশির গঠনে অনেক বেশি সাহায্য করে। সেইসঙ্গে হাতের মাড়ে থাকা
  কার্বোহাড্রেট এনার্জির ঘাটতি দূর করতেও সাহায্য করে।
  বলিরেখা দূর করতেঃ যাদের ত্বকে বলিরেখার সমস্যা রয়েছে তারা ১ টেবিল চামচ
  ভাতের বাসি মাড়, এক চিমটি হলুদের গুঁড়া, কয়েক ফোটা লেবুর রস এবং এক টেবিল চামচ
  বেসন একসঙ্গে মিশ্রণ করে নিতে হবে। এরপর পেজটি হয়ে গেলে মুখ, গলা উত্তকে ৩০
  মিনিট পর্যন্ত লাগিয়ে রাখুন। এরপর পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। নিয়মিত
  এইভাবে এই প্যাকটি ব্যবহার করলে আশা করি আপনার বলিরেখা খুব সহজেই দূর হয়ে যাবে।
  ডায়ারিয়ার চিকিৎসায় কাজে লাগেঃ অনেকেরই ডায়রিয়ার সমস্যা হয়ে থাকে
  অর্থাৎ পানির মত পায়খানা হয়। সেই সাথে আবার ব্যথা পেট খিঁচুনি হওয়া ইত্যাদি
  হয়ে থাকে। তাহলে আপনি যত দ্রুত সম্ভব ভাতের মাড় খাওয়া শুরু করতে পারেন। এতে করে
  আপনার অনেক উপকার মিলবে।
  রোদে পোড়া দাগ দূর করতেঃ অনেক সময় দেখা যায় রোদে বিভিন্ন সময় কাজ-কর্ম
  করার কারণে ত্বকে পোড়া দাগ হয়ে যায়। তবে এই রোদে পোড়া দাগ দূর করার জন্য এক
  টেবিল চামচ আলুর রস এবং এক টেবিল চামচ ভাতের মাড় একসঙ্গে মিশ্রণ করে নিন। মিশ্রণ
  করা হয়ে গেলে ত্বকে ১৫ মিনিটের মত ম্যাসাজ করুন। এরপর পরিষ্কার পানি দিয়ে ত্বক
  ভালোভাবে ধুয়ে ফেলুন। এতে করে আপনার রোদে পোড়া দাগ দূর হয়ে যাবে।
  ত্বকে জমে থাকা মরা চামড়া দূর করতেঃ ত্বকে জমে থাকে মরা চামড়া দূর করার
  জন্য প্রথমে আপনাকে এক টেবিল চামচ চাঁদের গুড়া এবং এক টেবিল চামচ দই ও
  কয়েকফোঁটা আমন্ড অয়েল একসঙ্গে মিশ্রণ করে নিতে হবে। এরপর ভাতের মার সেই
  মিশ্রণের সাথে মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে নিতে হবে। 
  এরপর সে পেস্ট তোকে ৩০ মিনিট পর্যন্ত লাগিয়ে রাখতে হবে। এরপর পরিষ্কার পানি
  দিয়ে স্ক্রাব করে ধুয়ে নিলেই আপনার কাজ শেষ। এভাবে প্রতিনিয়ত করলে আপনার ত্বকে
  জমে থাকা মরা চামড়া খুব সহজেই দূর হয়ে যাবে।
  ত্বকের ময়লা পরিষ্কার করতেঃ অনেক সময় বিভিন্ন কাজকর্ম করার ফলে ত্বকে
  প্রচুর পরিমাণে ময়লা জমে থাকে। তবে আপনি যদি ঘরোয়া পদ্ধতিতে প্রাকৃতিকভাবে ত্বক
  পরিষ্কার করতে চান তাহলে ভাতের মাড় আপনার জন্য অনেক উপকারী। 
  সাধারণত ভাত রান্না করার পর ভাতের মাড় সংগ্রহ করে তার সাথে কয়েক ফোটা এসেনশিয়াল
  ওয়েল এবং হাফ কাপ কুসুম গরম পানি একসঙ্গে মিশ্রন করে মুখে লাগিয়ে কিছুক্ষণ
  অপেক্ষা করে ধুয়ে নিন। এরপর ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখটা ভালোভাবে ধুয়ে তারপর শুকনা
  তোয়ালে দিয়ে পরিষ্কার করে নিন। আশা করি আপনার ত্বকের সমস্ত ময়লা গুলো দূর হয়ে
  যাবে।
ভাতের মাড়ের ক্ষতিকর দিক
  ভাতের মাড়ের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে জানার জন্য অনেকেই প্রশ্ন করেছেন। আজকের এই
  আর্টিকেলের অংশটুকুতে ভাতের মাড় খাওয়ার ফলে কি কি ক্ষতি হতে পারে তা জানিয়ে
  দেওয়ার চেষ্টা করব। আশা করি আপনারা এই বিষয়টি সার্চ করে যারা এই আর্টিকেলে
  এসেছেন তারা অবশ্যই এখান থেকে সঠিক তথ্যই পেয়ে যাবেন। তাহলে চলুন আর দেরি করে জেনে নেওয়া যাক।
  ভাতের মাড়ের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে জানার আগে ভাতের মাড় কি সেই সম্পর্কে জানতে
  হবে। ভাতের মাড় হলো ভাত রান্না করার পর সেই ভাত থেকে দুধের মত সাদা এক ধরনের
  পদার্থ আবরণ সৃষ্টি হয়। সাধারণত এটিকেই আমরা ভাতের ফ্যান বা ভাতের মাড় বলে
  থাকি। 
  এটি খাওয়া অত্যন্ত উপকারী। ভাতের মাড় খাওয়াড় ফলে শরীরের বিভিন্ন সমস্যা দূর হয়।
  কিন্তু ভাতের মার খাওয়া যেমন উপকার ঠিক তেমনি অপকারিতা ও রয়েছে। তাই আসুন এইবার
  ভাতের মাড় খেলে  কি কি ক্ষতি হতে পারে জেনে নিন। 
ভাতের মাড়ের ক্ষতিকর দিক সমূহঃ
- অধিকমাত্রায় ভাতের মাড় খাওয়ার ফলে পেট ব্যথা পেট ফাঁপা হজমের মতো সমস্যা হতে পারে।
- শুধু তাই নয়, খুব বেশি ভাতের মাড় খাওয়ার ফলে অতিরিক্ত মোটা হয়ে যেতে পারেন।
- ডায়রিয়ার মত সমস্যা দেখা দিতে পারে।
- বুকের চর্বি বৃদ্ধি হতে পারে।
- কোলেস্টেরল মাত্রা বেড়ে যেতে পারে।
- অতিরিক্ত ঘুম হতে পারে।
- দাঁত ক্ষয় হয়ে যেতে পারে।
- কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা হতে পারে।
- শরীরে চর্বি বেড়ে যেতে পারে।
- পাছার চর্বি বেড়ে যেতে পারে।
- দাঁতের এনামেল ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
- ভাতের মাড়ের ক্ষতিকর দিক মূলত এগুলোই।
ভাতের মাড় চুলে দিলে কি হয়
  পূর্বে আমরা জেনে এসেছি ভাতের মাড়ের
  ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে। এখন আমরা জেনে নিবো ভাতের মাড় চুলে দিলে কি হয় এই
  সম্পর্কে। চুলের যত্নে ভাতের মার কিভাবে ব্যবহার করবেন বা দিলে কি হয় এরকম
  প্রশ্ন অনেকেই করেন। তাই আপনাদের আজকে আমি এই বিষয়টি সঠিকভাবে জানিয়ে দেওয়ার
  চেষ্টা করব। তাই আসুন আর দেরি না করে জেনে নিন।
  আমাদের বাঙালি প্রতিটা ঘরে ঘরে ভাত রান্না হয়। আর এই ভাত রান্না হওয়ার শেষ
  পর্যায়ে ভাত ঝরিয়ে দুধের মত সাদা বর্ণের একটি পদার্থ বের করে ফেলে দিই। কিন্তু
  এটি আপনার চুলের জন্য কতটা উপকারী আপনি কি জানেন? চলুন তাহলে চুলের যত্নে কিভাবে
  আপনি এই ভাতের মাড় ব্যবহার করবেন সেই বিষয়ে জেনে নিন।
  চুলের যত্নে ভাতের মাড় ২ ভাবে ব্যবহার করতে পারেনঃ 
- স্প্রে বোতলে ভরে ব্যবহার করতে পারেন।
- সরাসরি চুলে ঢেলে ব্যবহার করতে পারেন।
  স্প্রে বোতলে ভরে ব্যবহারঃ আপনাকে চুল ভালোভাবে শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে।
  এরপর একটি কন্ডিশনার এবং ভাতের মার একসঙ্গে মিশ্রণ করে একটি বোতলে ভরে স্প্রে করে
  চুলে ব্যবহার করতে পারেন। এরপর আঙ্গুল দিয়ে চুল ভালোভাবে মেসেজ করুন। এরপর চিরনি
  ব্যবহার করুন। এরপর ১৫ থেকে ২০ মিনিট অপেক্ষা করুন। তারপর হালকা কুসুম গরম পানি
  দিয়ে আপনার চুল ভালোভাবে ধুয়ে ফেলুন। তাহলে আপনার কাজ শেষ। এভাবে আপনি স্প্রে
  বোতলে ভরে ব্যবহার করে চুলের যত্ন নিতে পারবেন।
  সরাসরি চুলে ঢেলে ব্যবহারঃ আপনি যদি সরাসরি চুলে ঢেলে ব্যবহার করতে চান তাহলে
  করতে পারবেন। এর জন্য আপনাকে ভাতের মার নিয়েচিরুনি দিয়ে চুল ভালোভাবে অক্সিজেন
  নিলেই হবে। এভাবে ব্যবহার করলে আপনার চুল অনেক সুন্দর ও লম্বা হবে। 
  তাছাড়া এই ভাতের মারে রয়েছে ভিটামিন ই ভিটামিন বি ম্যাগনেসিয়াম এবং জিংঙ্ক যা
  আপনার চুলের জন্য খুবই উপকারি। এভাবে আপনি প্রতিদিন কিংবা সপ্তাহে ১ দিন ব্যবহার
  করতে পারবেন। শ্যাম্পু করার পাশাপাশি আপনি এভাবে ব্যবহার করতে পারবেন। রুটিন
  অনুযায়ী প্রতিদিন এভাবে ব্যবহার করলে আশা করি আপনি ভাল ফলাফল পাবেন।
ভাতের ফ্যান খেলে কি হয়
  ঘুম থেকে উঠে ব্রাশ করে ভাত খাওয়া ছাড়া আমাদের জীবন কখনোই চলে না। কেউ দিনে
  একবার খাই কেউ আবার তিন বেলায় ভাত খেতে চাই। যদি আপনি ওজন কমাতে চান তাহলে
  তিনবেলা ভাত খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। কিন্তু কয়জন ওজন কমানোর জন্য তিন বেলা
  ভাত না খায়। প্রত্যেক মানুষই কমবেশি তিন বেলা ভাত খায়। 
  আপনারা হয়তো অনেকেই জানেন তিন বেলা ভাত খেলে একজন সুস্থ মানুষের ওজন এমনিতেই
  বৃদ্ধি হয়। কিন্তু ভাত ওজন বৃদ্ধি করলেও ভাতের ফ্যান কিন্তু মেট ঝরাতে অনেক বেশি
  সাহায্য করে। তাছাড়া এই ভাতের ফ্যানে পুষ্টিগুণে ভরপুর। শুনে হয়তো চমকে গেলেন?
  হ্যাঁ এটাই সত্য।
  ভাতের ফ্যানে বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও মিনারেল এ ভরপুর। শুধু
  তাই নয় এই ভাতের ফ্যানের মধ্যে ম্যাগনেসিয়াম পটাশিয়াম ভিটামিন বি এগুলো
  রয়েছে। এই উপাদানগুলো আপনার মেটাবোলিজম উন্নত করতে অনেক বেশি সাহায্য করে আবার
  অন্যদিকে এন্টি-অক্সিডেন্ট অক্সিডেটিভ চাপ কমাতে সাহায্য করে এবং রোগের ঝুঁকি
  কমায়। 
  পাশাপাশি ত্বকের স্বাস্থ্য উন্নত করতে বিশেষভাবে ভূমিকা পালন করে। শুধু তাই নয়
  এই ভাতের ফ্যান খাওয়ার ফলে পুষ্টির ঘাটতি দূর হয়। পাশাপাশি এই পানীয় খাওয়ার ফলে
  ক্যালোরির পরিমাণ খুব কম হয়। আর ওজন কমাতে গেলে কাজের দ্রুত খাবার কম খেতে হয় আর
  এ ক্ষেত্রেই ভাতের ফ্যান খাওয়া যেতে পারে।
  এছাড়াও ভাতের ফ্যানের মধ্যে দ্রব্য নিয়ে ফাইবার থাকার কারণে এটি খেলে পেট
  দীর্ঘক্ষণ ধরে থাকে ফলে হজমজনিত সমস্যা দূর হয়। ভাতের ফ্যানে থাকা ফাইবার
  অন্ত্রের স্বাস্থ্য উন্নত করতে সাহায্য করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। পাশাপাশি
  ওজন কমাতেও সাহায্য করে।
লেখকের শেষ কথা
  প্রিয় পাঠক সম্পূর্ণ আর্টিকেল পড়ে আশা করি ভাতের মাড়ের ক্ষতিকর দিক এবং ভাতের
  মাড়ের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে সঠিকভাবে জানতে পেরেছেন। আপনারা যদি
  আর্টিকেলটি পড়ে একটুও উপকৃত হয়ে থাকেন। তাহলে অবশ্যই আপনারা বন্ধুদের সাথে
  শেয়ার করতে ভুলবেন না।
  এই রকম আরো আর্টিকেল পেতে আমাদের ওয়েবসাইট নিয়মিত ভিজিট করুন। এই আর্টিকেলটি পড়ে
  যদি আপনার কোনো মতামত জানানোর থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করে সেটা জানিয়ে যাবেন।
  এই আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ার জন্য আপনাকে আন্তরিকভাবে শুভেচ্ছা।


এখানে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url